Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

ভাষা ও সংস্কৃতি

আজকের বাংলা ভাষার মুল ভিত্তি হলো আর্যভাষা। তিনি হাজার বছরের রুপান্তর ও অন্য তিন গোষ্ঠির ভাষার সাথে সংমিশণের  মাধ্যমে বর্তমান ভাষার উদ্ভব। আজ থেকে আড়াই তিন হাজার বছর আগে ইউরোপয়েড ধারার আর্যভাসী জনগোষ্ঠি ভারতে প্রবেশ করেই তাদের ভাষার প্রাঞ্চলতার সুবাদে দ্রুত প্রভাব বিস্তার করতে থাকে। এদের মাধ্যমে ভারতে প্রথম আসে বৈদিক বা ঋগ্বেদের ভাষা। এরপরে আর্যভাষা পাঞ্জাব থেকে উত্তর ভারত হয়ে বিহার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ল, খ্রীষ্টপুর্ব ১০০০ থেকে ৬০০ সালের মধ্যে। সাধারণে সংস্পর্শে এসে বৈদিক ভাষার ব্যাকারণের জটিলতা কিছুটা সরল হয়ে যায়। সাথে সাথে কথ্যভাষাও এর প্রবাবে বদলাতে থাকে। এ পর্যায়ে আর্যভাষার আওতাধীন বিস্তৃত অঞ্চলের পশ্চিম আর পুর্বের ভাষায় বেশ পার্থক্য দেখা দিল। পরিবর্তনটা এলো পুর্বের ভাষায়। ভাঙ্গন দেখা দিল আদি আর্যভাষায় এবং সৃষ্টি হলো প্রাকৃত ভাষার। পরবর্তীতে এই ভাষা পুরোপুরি প্রাকৃত আদল নিয়ে দুটি স্বতন্ত্র রুপ পেয়েছে পশ্চিমাঞ্চলের প্রাচ্য আর পুবাঙ্গলের প্রাচ্য। মগদে বলা হলো বলে শেষোক্তির নাম দেয়া হয় মাগাধি। মাগধি প্রাকৃতের কিছু সাহিত্যিক নির্দশন আরও পরের সংস্কৃত নাটক, যেমন মৃচ্ছকটিক এবং বররুচির ব্যাকরণে পাওয়া যায়। পরবর্তী সাতশ বছরে মাগধি প্রাকৃত ধীরে ধীরে বদলে একটি অপভ্রংশ ভাষার উদ্ভব হয়েছিল। এই অপভ্রংশই শ্রমে বিহারী (ভোজপুরি, মৈথিলি, মাগধি), বাংলা, অসমিয়া আর উড়িয়াতে পরিণত হচ্ছিল। অর্থাৎ অপভ্রংশে পরের ধাপেই বাংলা ভাষার কাল শুরু হয়। নবম-দমশ শতাব্দির দিকের চার্যাপদে নবীন বাংলা ভাষার আবির্ভাব ঘটলো। এটাকে ভাষাতাত্বিকরা বাংলা ভাষার আদিপর্ব বলেন। ১২০৩ খ্রিষ্টাবব্দে তুর্কি বিজয়ের পর স্বাভাবিকভাবেই কিছু দিনের জন্য স্থিতিশীলতা নষ্ট হয়। চর্যাপদের কালের প্রায় দেড়শ বছর ব্যবধানে ১৩৫০ খ্রিষ্টাব্দে রচিত বাংলা ভাষার আদি মহাকবি চন্ডিদাসের শ্রীকৃষ্ণর্কীতন এই বন্ধাত্বের অবসান ঘটায়। এই ভাবে শুরু হয় বাংলা ভাষার মধ্য পর্ব। পঞ্চদম থেকে অষ্টাদশ শতাব্দি পর্যন্ত ছিল বাংলা ভাষার মধ্যযুদের অন্তিমপর্ব। এ সময় চৈতন্যদেবের সমাজ বিপ্লব এবং বাংলার স্বাধীন সুলতানদের ঔদার্য ও পৃষ্ঠপোষকতার ফলে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে নতুন জোয়ার আসে। বাঙালি কবিরা সৃষ্টি করেন পদাবলী কীর্তন, ধর্মসাহিত্য, মঙ্গল সাহিত্য, প্রণয়োপাখ্যান ও পুঁথিসাহিত্য। বাংলা ভাষার আধুনিক যুগ শুরু হয় অস্টাদশ শতাব্দি থেকে। তবে উনবিংশ শতাব্দিতে এসেই ভাষা ও সাহিত্যের আধুনিক সত্ত্বা পেয়েছে। আধুনিক বাংলা ভাষার স্থপতিদের মধ্যে প্রদান প্রধান ব্যক্তিরা হচ্ছেন ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, মাইকেল মধুসুদর দত্ত, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টপধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম প্রমুখ। তাহলে বাংলা ভাষার বংশ পাঠিকা হচ্ছে- বৈদিক কথ্য ভাষার একটা রুপ>প্রাচ্য অঞ্চলের কথ্যভাষা>মাগধি প্রাকৃত.মাগধি অপভ্রংশ> প্রাচীণ বাংলা (চর্যাপদের ভাষা)> মধ্যযুদের বাংলা> আধুনিক বাংলা।